হাইব্রিড পেঁপে বীজ
60.00৳ Original price was: 60.00৳ .55.00৳ Current price is: 55.00৳ .
পেঁপে একটি অত্যন্ত উপকারী ফল যা কাঁচা এবং পাকা উভয় অবস্থাতেই খাওয়া হয়। এটি শুধুমাত্র সুস্বাদু নয়, এর রয়েছে অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা। নিচে পেঁপের বিভিন্ন গুণাগুণ, কখন এবং কিভাবে এটি রোপণ করা যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হলো।
পেঁপের উপকারিতা
* হজমশক্তি বৃদ্ধি: পেঁপেতে পাপাইন নামক একটি এনজাইম থাকে যা প্রোটিন হজমে সাহায্য করে। কাঁচা পেঁপেতে এটি বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এবং হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে খুবই কার্যকর।
* রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। নিয়মিত পেঁপে খেলে সর্দি, কাশি এবং অন্যান্য সংক্রমণের ঝুঁকি কমে।
* ত্বকের স্বাস্থ্য: পেঁপেতে থাকা ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে সতেজ ও উজ্জ্বল রাখে। এটি ত্বকের বলিরেখা কমাতে এবং ব্রণ প্রতিরোধ করতেও সহায়ক।
* চোখের স্বাস্থ্য: পেঁপেতে বিটা-ক্যারোটিন রয়েছে, যা শরীরে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়। এটি চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে এবং বয়সজনিত ম্যাকুলার অবক্ষয় (AMD) প্রতিরোধে সাহায্য করে।
* হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য: পেঁপেতে থাকা ফাইবার, পটাসিয়াম এবং ভিটামিন হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এটি রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সহায়ক।
* ওজন নিয়ন্ত্রণ: পেঁপেতে ক্যালোরি কম এবং ফাইবার বেশি থাকায় এটি ওজন কমাতে সহায়ক। এটি পেট ভরা অনুভূতি দেয়, ফলে অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকা যায়।
পেঁপে কখন রোপণ করা লাগবে
পেঁপে একটি উষ্ণ আবহাওয়ার ফসল। সঠিক তাপমাত্রায় এটি ভালোভাবে বৃদ্ধি পায় এবং ফলন দেয়।
* উপযুক্ত সময়: পেঁপে সারা বছরই চাষ করা যায়, তবে সবচেয়ে ভালো সময় হলো মার্চ থেকে এপ্রিল মাস। এই সময়ে চারা রোপণ করলে বর্ষার আগেই গাছ বড় হয়ে ওঠে এবং ফলন শুরু হয়। শীতের সময় চারা রোপণ করলে গাছের বৃদ্ধি কম হয়।
পেঁপে কিভাবে রোপণ করতে হবে
পেঁপে চাষ করা তুলনামূলকভাবে সহজ এবং এটি টবে বা জমিতে উভয় স্থানেই সফলভাবে ফলানো যায়।
* বীজ সংগ্রহ এবং চারা তৈরি:
* পাকা পেঁপের মাঝের কালো বীজগুলো সংগ্রহ করে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে নিন।
* একটি ছোট পাত্রে বা বীজতলায় দো-আঁশ মাটি, গোবর সার এবং বালি মিশিয়ে বীজতলা তৈরি করুন।
* বীজগুলো হালকাভাবে ছড়িয়ে তার ওপর সামান্য মাটি দিয়ে ঢেকে দিন। মাটির আর্দ্রতা বজায় রাখুন।
* বীজ থেকে চারা গজাতে সাধারণত ২-৩ সপ্তাহ সময় লাগে। যখন চারাগুলো ১৫-২০ সেমি লম্বা হবে, তখন সেগুলোকে মূল জায়গায় রোপণ করার জন্য প্রস্তুত।
* জমি বা টব তৈরি:
* মাটি: জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ দো-আঁশ বা বেলে দো-আঁশ মাটি পেঁপে চাষের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত।
* গর্ত তৈরি: প্রতি গর্তে পচা গোবর সার, টিএসপি (ফসফেট) সার এবং সামান্য ইউরিয়া সার মিশিয়ে দিতে হবে। টবে লাগানোর জন্য ভালো মানের পটিং মিক্স ব্যবহার করতে পারেন।
* দূরত্ব: একটি চারা থেকে অন্যটির দূরত্ব ২-৩ মিটার রাখা উচিত, কারণ পেঁপে গাছের গোড়া বেশি ছড়ায়।
* চারা রোপণ:
* প্রতিটি গর্তে ২-৩টি চারা রোপণ করুন। পরবর্তীতে সবচেয়ে সুস্থ চারাটি রেখে বাকিগুলো তুলে ফেলুন।
* চারা রোপণের পর হালকা সেচ দিন।
* পেঁপে গাছে পুরুষ ও স্ত্রী ফুল আলাদা হয়। কিছু গাছে শুধু পুরুষ ফুল হয় যা থেকে ফল আসে না। তাই একাধিক চারা রোপণ করলে ফলনের সম্ভাবনা বাড়ে।
* পরিচর্যা:
* জলসেচ: নিয়মিত মাটির আর্দ্রতা পরীক্ষা করে প্রয়োজনমতো সেচ দিন। তবে গাছের গোড়ায় যেন পানি না জমে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
* সার প্রয়োগ: গাছের বৃদ্ধির সময় এবং ফল আসার আগে নিয়মিত জৈব সার বা রাসায়নিক সার প্রয়োগ করলে ফলন ভালো হয়।
* আগাছা দমন: গাছের গোড়া পরিষ্কার রাখুন এবং নিয়মিত আগাছা দমন করুন।
এই পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করে আপনি সহজেই আপনার বাগানে বা টবে পেঁপে চাষ করতে পারবেন এবং এর পুষ্টিগুণ উপভোগ করতে পারবেন।
